চট্টগ্রাম কলেজে ছাত্রদলের নেতাকর্মীদের ওপর হামলার অভিযোগ উঠেছে ছাত্রশিবিরের বিরুদ্ধে। মেয়েদের সঙ্গে ‘কথা বলা’র অভিযোগ এনে ধরে নিয়ে ছাত্রদলের অন্তত পাঁচজন নেতাকর্মীকে দুই দফায় মারধর করা হয়। শিবিরের শতাধিক নেতাকর্মী দেশীয় অস্ত্র ও রামদা হাতে মারধরের পর আহতদের সিএনজিতে তুলে কলেজছাড়া করা হয়। হামলার সময় দুটি ককটেল বিস্ফোরণও ঘটানো হয় বলে অভিযোগ উঠেছে। আহত পাঁচজনকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (২৬ সেপ্টেম্বর) দুপুরে চট্টগ্রাম কলেজে এ ঘটনা ঘটেছে।
চট্টগ্রাম মহানগর উত্তর ছাত্রশিবিরের সভাপতি ফখরুল ইসলামের নেতৃত্বে শিবিরের শতাধিক নেতাকর্মী দেশীয় অস্ত্র ও রামদা হাতে আমাদের উপর চারপাশ থেকে অতর্কিত হামলা করে— হামলার শিকার ছাত্রদল নেতারা এমন অভিযোগ তুললেও ওই শিবির নেতা সেখানে উপস্থিত ছিলেন কিনা বারবার যোগাযোগের চেষ্টা করেও তা যাচাই করা সম্ভব হয়নি।
প্রত্যক্ষদর্শী ও ভুক্তভোগীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বৃহস্পতিবার দুপুর ১২টার দিকে অধ্যক্ষের ভবনের সামনে মেয়ে সহপাঠীসহ কয়েকজনের সঙ্গে কথা বলছিলেন ছাত্রদলের কর্মী আশরাফুল ইসলাম। এ সময় ছাত্রশিবিরের কয়েকজন নেতাকর্মী এসে তাকে জিজ্ঞেস করেন ক্যাম্পাসের ভেতরে মেয়েদের সঙ্গে কেন কথা বলছেন তিনি। উত্তরের অপেক্ষা না করেই শিবিরের নেতাকর্মীরা তাকে সেখান থেকে তুলে নিয়ে মারধর শুরু করেন।
ভুক্তভোগী ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, মার খাওয়ার পর আশরাফুল বিষয়টি চট্টগ্রাম কলেজের অধ্যক্ষ মোজাহেদুল ইসলাম চৌধুরীকে জানান। অধ্যক্ষের পরামর্শ অনুযায়ী আরও কয়েকজন সহপাঠীকে সঙ্গে নিয়ে চট্টগ্রাম কলেজের অধ্যক্ষকে লিখিত অভিযোগ দিতে যান আশরাফুল।
ঘটনার শিকার আশরাফুল ইসলাম চট্টগ্রাম প্রতিদিনকে বলেন, ‘অধ্যক্ষকে অভিযোগ জমা দিয়ে ফেরার পথে চট্টগ্রাম মহানগর উত্তর শিবিরের সভাপতি ফখরুল ইসলামের নেতৃত্বে শিবিরের শতাধিক নেতাকর্মী দেশীয় অস্ত্র ও রামদা হাতে আমাদের উপর চারপাশ থেকে অতর্কিত হামলা করে। তারা আমাদের লক্ষ্য করে দুটি ককটেলও ছুঁড়ে মারে।’
ছাত্রদলের এই নেতা অভিযোগ করেন, ‘কলেজ অধ্যক্ষ মোজাহেদুল ইসলাম শিবিরের পক্ষে। তিনি ক্যাম্পাসে শিবির পোষেন।’
আশরাফুল ইসলাম ছাড়াও এই হামলা আহত হন চট্টগ্রাম কলেজ ছাত্রদলের যুগ্ম আহবায়ক সাইফুল করিম আরিয়ান, শরীফুল ইসলাম আবির, আজিজুল হক নাঈম ভূইয়া ও শোয়াইবুল ইসলাম।
ঘটনার শিকার চট্টগ্রাম কলেজ ছাত্রদলের যুগ্ম আহ্বায়ক সাইফুল করিম আরিয়ান চট্টগ্রাম প্রতিদিনকে বলেন, ‘কয়েকজন মেয়ে সহপাঠীর সঙ্গে পরবর্তী ক্লাসে যাওয়ার অপেক্ষা করছিল আশরাফ। মেয়েদের সঙ্গে কথা বলার অজুহাতে তাকে মারধর করা হলেও মূল কারণ ছিল সে ছাত্রদল কর্মী। তাকে সেখান থেকে তুলে নিয়ে গিয়ে টর্চারসেলে নিয়ে মারধর করা হয়। মারধরের পর হামলাকারীরা আশরাফকে সিএনজিতে তুলে কলেজ থেকে পাঠিয়ে দেয়।’
হামলার শিকার ভুক্তভোগীরা জানান, হামলায় মতিউর রহমান নামে এক শিবির নেতা সামনে থেকে নেতৃত্ব দেয়। ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা অধ্যক্ষের রুমে অভিযোগ দিতে গেলে মতিউরের নেতৃত্বে দল বেধে তারাও সেখানে যান।
এদিকে ঘটনার বিষয়ে জানতে চট্টগ্রাম কলেজের অধ্যক্ষ মোজাহেদুল ইসলাম চৌধুরীর বক্তব্য জানতে একাধিকবার ফোন করা হলেও তিনিও কল রিসিভ করেননি। অন্যদিকে চট্টগ্রাম মহানগর উত্তর ছাত্রশিবিরের সভাপতি ফখরুল ইসলামকে ফোন কল ছাড়াও এসএমএস পাঠিয়েও তার পক্ষ থেকে কোনো সাড়া মেলেনি।
0 Comments